Skip to content

খোঁজ

ঘরে ফেরার পথে আশঙ্কাজনক হারে আমি ইদানীং রাস্তা হারায়ে ফেলি। রাস্তা হারানোতে আমি যতটা না শঙ্কিত হই তার থেকেও বেশি শঙ্কিত হই এটা বুঝতে পেরে যে এইসকল হারিয়ে যাওয়া রাস্তা পরবর্তী সময়ে খুঁজে পাওয়ার পরেও আমার আসলে বিশেষ আনন্দ অনুভূত হয় না। কিন্তু দুনিয়ার জেনেরিক নিয়ম এবং আমার নিজস্ব অনুভূতির ইতিহাস বলে যে এমনটাতো হওয়ার কথা ছিল না।

দারোয়ান ভাই আমাদের বাড়ির গেট ১১ টার সময় বন্ধ করে দিবে এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমার বাড়ি ফেরার তাড়া কাজ করে বটে, তবে ইচ্ছা কিংবা আগ্রহ কোনটাই কাজ করে না। রাস্তা খুঁজে পেয়েও আমি তাই মনে হয় একটু দুঃখই পাই।

আমি বহুদিন যাবৎ যে বাড়ি ফিরে যাওয়ার স্বস্তি ও আনন্দ থেকে বঞ্চিত, এই উপলব্ধি আমাকে বেশ ব্যথিত করে। দিনশেষে এই ব্যথাবোধ আমায় আরেক দফা ক্লান্ত করে কিন্তু ঘুম দেয় না। রাতের পর রাত এক অদ্ভুত অচেনা যন্ত্রণা নিয়ে আমি চুপচাপ জেগে থাকি।

ভোর নাগাদ একটু ঘুম আসে এবং সেই ঘুমও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। খানিক বাদে বাদেই আমার ঘুম ভেঙে যায় এবং আমি জোরপূর্বক নিজেকে ঠ্যালাঠেলি করে আবারো ঘুমে পাঠাই। এইসকল ঘুমে আমি অদ্ভুত অদ্ভুত সব স্বপ্নও দেখি। ঘুম থেকে উঠে এসকল স্বপ্নের পোস্টমর্টেম করতে বসে আমি আরেকবার দিক হারাই এবং প্রচন্ড দিশেহারা বোধ করি। মুক্তি পেতে পর্দা সরিয়ে বাইরে তাকালে যে রাস্তা আমার দু’চোখে পড়ে সেটাও বড় বন্ধুর লাগে এবং পরবর্তী বেশকিছুদিন নির্বাসনস্বরূপ গৃহবন্দীর আদেশ নিজের ওপর জারি থাকে।

এই স্বেচ্ছাচারী বন্দীজীবন অসহ্য বোধ হওয়া শুরু হলে চোখ-নাক-মুখ বুজে আবারও বের হয়ে পড়ি এবং ফিরতি পথে অবধারিতভাবে আমি আবারো রাস্তা হারাই। এবং বাস্তবতার কাছে পরাজয় স্বীকার করে ফের রাস্তা খুঁজে আবারো আমার গাড়ি ঘরের দিকে চলতে থাকে আর মাথার মধ্যে একনাগাড়ে বাজতে থাকে, “ফিরবো ঘরে, কোথায় এমন ঘর?”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *