Skip to content

শীর্ষেন্দু-০২

তিনি অন্যমনস্কভাবে বললেন- ইউনিয়ন করতাম, বিড়ি বাঁধতাম, গুড় বেচতাম, কাপড়ের গাঁট ফিরি করতাম। আমার পরিবার প্রতিপালন এবং আন্দোলন-দুই-ই এই দুই হাতে করেছি। বিশ বছর প্রতিশোধের নেশা ছিল। বিশ বছর আমি বিয়ে করি নি, বিশ বছর একটি সুন্দর মেয়ে অপেক্ষা করে আছে। অপেক্ষা করতে করতে তার যৌবন কেটে গেল, ঝরে গেল রূপ, এক ঢাল চুল পাতলা হয়ে গেল। বিশ বছর ধরে আমি কি আন্দোলন করেছি-হিসেব করতে গিয়ে দেখি- বিশ বছরে আমি কিছু স্বার্থপর লোভী লোকের বদলী আটকেছি, সাসপেনশন রদ করেছি, ঘুষ ধরেছি কিংবা আরো অনেক কিছু করেছি- কিন্তু তাতে কি হয়েছে? কিছু না, অভাবে অভাবে আমার চরিত্র নষ্ট হয়েছে, টাকা খেয়েছি, বদনাম কিনেছি। এর বেশি আর কিছু হওয়ার নেই আমার। বলেছি তো, আমি মার্ক্স-লেনিন-গান্ধী বুঝি না। আমি সহজ হিসেব-নিকেশ করে দেখেছি- আমার যা পাওয়া উচিৎ ছিল আমি তা পাইনি। কিন্তু অন্যরা আমাকে ভাঙিয়ে কাজ গুছিয়ে নিচ্ছে। অতনু, পয়তাল্লিশ বছর বয়সে এখন হঠাৎ আমার নিজেকে বড় বোকা-বোকা লাগছে। অতনু, সুপ্রিয়দাকে বলো, আমার লড়াই আমি করেছি। আর আমার কিছু করার নেই। এখন জীবন থেকে আমি কিছু পেতে চাই। মরবার আগে যেন অন্তত একবার মনে হয়- জীবনটা সুন্দর ছিল।

-ফেরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *